এ বছর বাণিজ্যিকভাবে বাঙ্গি চাষে লাভবান দাউদকান্দির কৃষকরা। এই উপজেলায় কম-বেশি সবাই বাঙ্গি চাষ করে থাকেন।বেলে মাটি ও দোঁআশ মাটিতে বাঙ্গির আবাদ ভালো হয়। চাষাবাদ পদ্ধতি সহজ ও অন্যান্য ফসলের তুলনায় খরচ কম হওয়ায় বাঙ্গি চাষে আগ্রহী হয়ে থাকে কৃষকরা।
বাঙ্গি এক রকমের শশা জাতীয় ফল যার অন্য নাম খরমুজ, কাঁকুড়, ফুটি। যার বৈজ্ঞানিক নাম Cucumis melo এবং ইংরেজি নাম Muskmelon. দেশের প্রায় সব এলাকাতেই গ্রীষ্মকালে বাঙ্গি জন্মে। তরমুজের পর এটিই অধিক প্রচলিত শসা গোত্রীয় ফল। বাঙ্গিগাছ দেখতে অনেকটা শসা গাছের মতো, লতানো। এ বছর রমজান মাসে দেশীয় ফল বাঙ্গির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তরমুজের দাম কিছুটা বেশী হওয়ায় কম আয়ের বেশীরভাগ মানুষ তাদের ইফতারে এই বাঙ্গি খেয়ে থাকে। তবে রোজার শুরুতেই আবহাওয়া ঠান্ডা থাকায় বাঙ্গি ও তরমুজের দাম কিছুটিা কম । সাধ্যের মধ্যেই এ ফলের সাধ নিতে পারছে সাধারণ মানুষ।
জানা যায়, কুমিল্লার মেঘনা ও দাউদকান্দি উপজেলায় সবচেয়ে বেশী চাষ করা হয় এ বাঙ্গির।এছাড়াও ইলিয়টগঞ্জ ইউনিয়নের টামটা গ্রামে চাষ হয় বাঙ্গি। প্রায় অনেক বছর আগে সুদূর চীন থেকে এর বীজ নিয়ে আসা হয়েছিল। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় সারাদেশে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মার্চ-মে বেলে-দোঁআশ মাটিতে বাঙ্গি বেশ ভালো ফলে। খুব অল্প সময়ের মৌসুমী ফল এটি। ডিসেম্বরের শুরুতেই এ চারা রোপণ শুরু হয়। চলে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত। টানা তিন মাস ধরে কৃষকরা এর পরিচর্যার মাধ্যমে চাষ করে থাকেন। উৎপাদিত ফসল ভালো দামে বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন। তাই দিন দিন এর চাষ বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে।
মেঘনা থানার আড়াই আনী, হরিপুর, চালিভাঙ্গা,মইশার চর, ফরাজিকান্দা, নলচর,ছোট চরসহ বিভিন্ন গ্রামে বাঙ্গি ও তরমুজের চাষাবাদ করা হয়।
চাষি মনির মিয়া বলেন, আমি এবছর ৫ বিঘা জমিতে বাঙ্গির চাষ করেছি। চাষে সব মিলে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ইতোমধ্যে জমি থেকে তুলে ৯০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করেছি। জমিতে আরো যা আছে ২০ হাজার টাকার বিক্রি করতে পারবো।
একই গ্রামের অশীতিপর রহিম, আলী আযম, আজগর মিয়া বলেন, আমরা সবাই ভোরবেলা থেকে জমি থেকে বাঙ্গি তোলা শুরু করি। তারপর সকাল ৯টার মধ্যে বাজারে নিয়ে যাই। সেখানে পাইকার ও খুচরা দুইভাবেই বিক্রি করি। আমরা এর চাষ করে লাভ করতে পারছি।
কৃষি সম্প্রারণ অধিদফতর কুমিল্লার উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, বাঙ্গি খুবই সুস্বাদু একটি ফল। এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, শর্করা ও সামান্য ক্যারোটিনসমৃদ্ধ। মানবদেহের বিভিন্ন রোগের প্রতিকার হিসেবেও এটি ভালো কাজ করে। দাউদকান্দি উপজেলায় প্রায় ৫০০ একর জমিতে বাঙ্গির চাষ হয়েছে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ নিউজ জাগো সোনারগাঁও ২৪
Leave a Reply