মোঃ আব্দুস সালাম সুজন
নওয়াব আলী পেশায় একজন দলিল লিখক ও শিক্ষানবীশ আইনজীবি। কিন্তু তাতে কি ? ছেলের শখ ময়ূর দেখার । সেই শখ পূরণ করতে বারে বারে তো আর চিড়িয়াখানায় যাওয়া যায় না । তাইতো ছেলের শখ মেটাতে সিদ্ধান্ত নিলেন ময়ূরের ফার্ম করবেন। ২০২০ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় গজারিয়া পাড়ায় ২০ শতক জায়গায় গড়ে তোলে ময়ূর খামার। ২০২১ সালে ইন্ডিয়ান ভুলু জাতের ১ জোড়া ময়ূর দিয়ে শুরু করেন তার ফার্মের যাত্রা। ময়মনসিংহ থেকে তিনি এ ময়ূর জোড়া সংগ্রহ করেন প্রায় লাখ টাকা দিয়ে। এখন তার ফার্মে রয়েছে ৪ জোড়া ময়ূর। ময়ূরের পাশা-পাশি রয়েছে টার্কি ৮ জোড়া, ব্রাহাম মুরগি মুরগী ৫ জোড়া, সিল্কী মুরগী ৪ জোড়া, জাপানের জাতীয় পাখি রিংরেন্ট ফিজেন্ট রয়েছে ১০ জোড়া। খাবার হিসেবে শাক-সবজি,ঘাস, দানা জাতীয় খাবার,গম,ভুট্টা ইত্যাদি খেয়ে থাকে। এগুলো লালন-পালন করার জন্য রয়েছে ছোট ভাই আরিফ,টুটুলসহ রয়েছে ২ জন কর্মচারী। এছাড়াও নওয়াব আলীর শখের ময়ূরের খামারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছ-পালা । এলাকায় তার আশে-পাশের মানুষ এটাকে খামার বাড়ি বলে চিনে। ময়ূর দেখতে ভীড় জমায় অনেক এলাকার মানুষ। তবে সব সময় ফার্মের ভিতরে ঢোকার অনুমতি নেই। শুধু মাত্র পূর্ব অনুমতি নিয়ে দেখতে পাওয়া যায় এ ময়ূর খামার। ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের বায়না পূরণ করতে অনেকে এখানে নিয়ে আসে। পাশের গ্রামের লিমা আক্তার নামের এক গৃহিনী তার ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দেখতে আসে নওয়াব আলীর এই ময়ূর খামার নিউজ জাগো সোনারগাঁও২৪.কম পত্রিকার প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ছোট বাচ্চাদের বিনোদনের তেমন কোন জায়গা না থাকায় এই ময়ূরের খামারে প্রায়ই ঘুরতে আসি। এতে করে ছোট বাচ্চাদের বায়না পুরণ। এখানকার পরিবেশও খুব ভালো। এই ফার্মে ময়ূর দেখতে আসলে কোন টিকিটও লাগে না।
ঢাকার মিরপুর ১২ থেকে দুবাই প্রবাসী কালাম সাহেব তার পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসে পেরাবোর তাজমহল । আশে -পাশের লোকজনদের কাছ থেকে শুনতে পেয়ে এই ময়ূর খামার দেখতে আসে পরিবার নিয়ে। তিনি এ উদ্যাগকে স্বাগত জানায়, বলেন গ্রামীন পরিবেশে এমন একটি সুন্দর ময়ূর খামার দেখতে পেয়ে আমরা অভিভূত। ভবিষ্যতে বন্ধু-বান্ধর ও আত্মীয় স্বজন নিয়ে পিকনিক করতে এ খামারে আসবেন বলে তিনি জানায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় নওয়াব আলীর ময়ূর খামারের কথা বললে সবাই একনামে চিনে ফেলে। মোঃ আব্দুল সাত্তার নামের এক রিকসা চালক বলেন, আমাদের এই গজারিয়াপাড়া গ্রামে ময়ূরের খামারের জন্য অনেক এলাকার মানুষ ভীড় করতে দেখা যায়। এছাড়াও এই ময়ূরের খামারের জন্য এলাকার পরিচিতও বেড়ে গেছে।
খামারের মালিক নওয়াব আলী নিউজ জাগো সোনারগাঁও২৪.কম প্রতিনিধিকে বলেন, সন্তানের আশা পূরণ করতেই এই খামার গড়ে তুলি। এখন অনেকেই এই খামার দেখতে আসে। বিষয়টা আমার কাছে খুব উপভোগ্য মনে হয়। তিনি জানায়, খামারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে মুন্সিগঞ্জ থেকে কারিগর এনে তৈরি করেছি মুন্সিগঞ্জের বিখ্যাত কাঠের তৈরি দ্বিতলা ঘর। সম্পূর্ণ লোহা কাঠ দিয়ে তৈরিকৃত এই ঘরটি দেখতে উৎসুখ জনতার ভীড় লেগেই থাকে। একসাথে মুন্সিগঞ্জের বিখ্যাত ঘর ও ময়ূরের খামার দেখতে অনেকেই এখানে আসেন পরিবার- পরিজন নিয়ে। তবে কেউ যদি এখানে পিকনিক করতে চায় তাহলে কিছু শর্ত সাপেক্ষে ভাড়া নিতে পারবে। ভবিষৎতে এই খামারের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে অনেক প্রদক্ষেপ নেওয়া হবে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ নিউজ জাগো সোনারগাঁও ২৪
Leave a Reply