মোঃ আব্দুস সালাম সুজন

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ না হতেই দরজায় কড়া নাড়ছে উপজেলা পরিষদ নিবাচন। উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনীর প্রচার-প্রচারনা, ব্যানার, ফেষ্টুন ও সামাজিক গনমাধ্যমে নিজেদের উপিস্থিতি জানান দিচ্ছে অনেকে। দেশে বর্তমানে উপজেলা রয়েছে ৪৯৫টি। গত ২০১৯ সালের ১০ মার্চ নির্বাচন শুরু হয়ে ৫টি ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে জুনে শেষ হয়। আইন অনুযায়ী উপজেলা পরিষদের মেয়াদ হচ্ছে প্রথম সভা শুরু হওয়া থেকে পরবর্তী ৫ বৎসর। মেয়াদ পূর্তির ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে হয়। তবে ইসি জানায় এবারও বেশ কয়েকটি ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা নির্বাচন। প্রথম ধাপে ১০০ টি উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের প্রথম তফসিল ঘোষনা করা হবে জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে। সামনে এস.এস.সি পরিক্ষা, রোজা ও ঈদ থাকায় কিছুটা দেরিও হতে পারে তবে এপ্রিলের শেষ দিকে শুরু হতে পারে উপজেলা নির্বাচন এমনইি জানিয়েছে (ইসি) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে নির্বাচন কমিশনের (ইসির) অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনের মৃত্যুতে সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হয়ে যায়। সেই সময় অন্য কোন প্রার্থী না থাকায় প্রবীন রাজনীতিবিদ হিসেবে তার সম্মানার্থে সিলেকশনে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় উপজেলা চেয়াম্যান নির্বাচিত হয়। এবার সোনারগাঁ উপজেলায় বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থী উপজেলা নির্বাচন করবেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন সাবেক সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমানে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের ১নং সদস্য মাহফুজুর রহমান কালাম। তিনি সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে বেশ কয়েকবার পরাজিত হলেও এবার সবাই তাকেই বেছে নিবেন বলে মনে করেন অনেক নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। এছাড়াও মাহফুজুর রহমান কালামের ব্যাক্তিগত ভোট ব্যাংক আছে প্রায় ৫০,০০০ হাজারের উপরে। এবার সোনারগাঁ উপজেলার মানুষের তার প্রতি অন্যরকম আবেগ কাজ করছে বলেও অনেকে মনে করেন। তাছাড়া সোনারগাঁ আওয়ামীলীগের একজন দক্ষ, মেধাবী,অভিজ্ঞ, দূরদর্শী, কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে ইতিমধ্যেই তিনি সবার নজড় কেড়েছেন। সোনারগাঁ আওয়ামীলীগে মাহফুজুর রহমান কালামের রয়েছে অনেক অবদান। তিনি সোনারগাঁ সরকারী কলেজের ছাত্রলীগ সভাপতি হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন (১৯৮৯ -১৯৯২) পর্যন্ত।এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন (১৯৯১-১৯৯৬) সাল  পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামীলীগের   যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে (১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৪) পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। সোনারগাঁ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি,
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।  এছাড়াও এরশাদ বিরোধী আন্দোলন, বিএনপি জামায়েত সরকারের আমলে বহুবার কারা নির্যাতিত হন এই মাহফুজুর রহমান কালাম। বিগত ১০ বৎসর সোনারগাঁ আওয়ামীলীগকে তৃনমূল পর্যায়ে টিকিয়ে রাখতেও কালামের অনেক অবদান রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। মাহফুজুর রহমান কালাম ছাড়াও উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হবার দৌড়ে আছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়াম্যান এডভোকেট সামছুল ইসলাম ভূঁইয়া, এছাড়াও নাম শুনা যাচ্ছে সোনারগাঁ উপজেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইঞ্জিঃ মাসুদুর রহমান মাসুমের কথা। এছাড়াও উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হবেন,উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলহাজ্ব রফিকুল ইসলাম নান্নু, সোনারগাঁ ,বিশিষ্ট শিল্পপতি ও আওয়ামীলীগ নেতা মনির হোসেন, এদিকে বিএনপি এবার দ্বাদশ নির্বাচনে অংশগ্রহন করেনি তাই ধরেই নিতে হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনেও অংশগ্রহন করবে না। আর জাপা তফসিল ঘোষনার পর সিদ্ধান্ত নিতে পারে । তাই এবার সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাচনে লড়াই হবে আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের মধ্যে। তবে দলের হাইকমান্ড থেকে শোনা যাচ্ছে অনেক কেন্দ্রীয় নেতা উপজেলায় দলীয় প্রতীক না দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। দলীয় প্রতীক থাকছে না এমন আভাস গত ২৩ জানুয়ারী সোমবার রাতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি সভা শেষে গণভবন গেটে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোনারগাঁয়ে যার জনপ্রিয়তা বেশি বা সাধারণ ভোটার যাকে বেছে নিবে সেই হবে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। আর সেই দিক বিবেচনায় মাহফুজুর রহমান কালামের সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, (সনমান্দি ইউনিয়নের  সাবেক চেয়ারম্যান) সাবাবুদ্দিন সাবু নিউজ জাগো সোনারগাঁও২৪.কম পত্রিকাকে বলেন, মাহফুজুর রহমান কালাম ভাই আমাদের রাজনৈতিক আইডল। তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হলে সোনারগাঁ বাসি একজন ভালো অভিভাবক পাবেন। তাই এবারের উপজেলা নির্বাচনে সবাই মাহফুজুর রহমান কালাম ভাইকে ভোট দিয়ে জয়ী করবেন বলে আমার প্রত্যাশা।

সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সদস্য, (জামপুর ইউনিয়নের  চেয়ারম্যান) হামিম শিকদার শিপলু নিউজ জাগো সোনারগাঁও২৪.কম পত্রিকাকে বলেন, মাহফুজুর রহমান কালাম ভাই একজন ত্যাগী নেতা, তিনি কর্মী মূল্যায়ন করতে কার্পন্য করে না। আমরা চাই এবার তিনি উপজেলা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সোনারগাঁও উপজেলা কে একটি মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলবে।

নিউজ জাগো সোনারগাঁও২৪.কম পত্রিকার প্রতিনিধির সাথে এক আলাপ চারিতায় সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদের অন্যতম চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালাম বলেন, দীর্ঘদিন রাজনৈতিক জীবনে আমি আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত , আমার রক্তে আওয়ামীলীগ মিশে আছে। বিএনপি জামায়েত সরকারের আমলে বহুবার জেল খেটেছি। তাই আমি চাই এবার দলীয় প্রতীক (নৌকা) থাকলে দল অবশ্যই আমাকে মনোনয়ন দিবে আর যদি কোন দলীয় প্রতীক বরাদ্দ না থাকে (ওপেন ফিল্ড) থাকে তাহলেও আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবো ইনশাল্লাহ।

উপজেলা নির্বাচনে সাধারণ ভোটার ও নেতা কর্মীদের কেমন সাড়া পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন , সোনারগাঁয়ে আনাচে-কানাচে আমার অনেক নেতা কর্মী আছে তারা আমাকে অনেক ভালোবাসে তাই তাদের প্রত্যাশা পূরণেই আমি রাজনীতি করি। আমি আমার নেতা কর্মীদের জন্যই উপজেলা নির্বাচন করছি তাদের চাওয়া আমি এবার জয়ী হয়ে তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করি।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে জয়ী হয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল সোনার বাংলা গড়তে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে সকল প্রকার উন্নয়নে সোনারগাঁ বাসিকে একটি আদর্শ উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এছাড়াও মাদক নির্মূল ও শিক্ষা ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখতে চাই। সোনারগাঁয়ের শিক্ষাক্ষেত্রকে আরও ত্বরান্বিত করতে চাই। তিনি আরও বলেন, আমি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে সোনারগাঁ উপজেলার সকল স্তরের মানুষের কল্যাণে নিজেকে সপে দিতে চাই ,বাকিটা জীবন যেন আমি সোনারগাঁ বাসীর উন্নয়নে কাজ করতে পারি তার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।