নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
হিন্দু ধর্মালম্বীদের দুদিনব্যাপী মহাষ্টমী পুণ্যস্নান উৎসব শুরু হলো আজ থেকে। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দের আদি ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এই স্নানউৎসব পালন হবে।
পুণ্যস্নান লগ্ন শুরু হবে সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে। আর শেষ হবে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫৬ মিনিটে।
এ দিন বাংলাদেশসহ ভারত, শ্রীলংকা, নেপাল ও ভুটানসহ দেশি বিদেশি কয়েক লাখ পুণ্যার্থী স্নান উৎসবে মেতে উঠবেন। এবার লাঙ্গলবন্দে স্নান উৎসবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা পুলিশ।জায়গায় জায়গায় পুলিশি টহল দিতে দেখা গেছে। লাঙ্গলবন্দ প্রধান সড়ক থেকে ঘাটে যাওয়ার সড়ক দিয়ে কোন প্রকার য্নবাহন চলাচল করতে দেখা যায়নি। যানযট নিরসনে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানায় দায়িত্ব প্রাপ্ত এক ট্রাফিক পুলিশ।
‘হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য আমার পাপ হরণ কর’-এ মন্ত্র উচ্চারণ করে পাপ মোচনের আশায় ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা স্নান উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন। স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুণ্যার্থীরা ডাব, দুর্বা, বেলপাতা ফলমূলসহ বিভিন্ন পূজার সামগ্রী নিয়ে পুণ্যস্নানে আদিকাল থেকেই অংশ করছেন। দুদিনব্যাপী এ স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীর ঢল নামবে পুরো তীর্থস্থানের এলাকাজুড়ে। পাপমোচনের আশায় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পুণ্যার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠবে লাঙ্গলবন্দ। তবে বৈশাখের তপ্ত রোদে পুণ্যার্থীদের অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। মমতা রানী নামের এক পঞ্চাশ বছরী নারী জানায়, প্রতি বছরের চেয়ে এবার গরম একটু বেশিই মনে হচ্ছে । আমি গাজীপুরের কাপাসিয়া থেকে এসেছি। প্রতি বছরই স্নান করতে এখানে আসি। ভগবান যেন পাপমুক্তি করে।
লাঙ্গলবন্দ মহাষ্টমী স্নান উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবার ২০টি স্নান ঘাট পুণ্যার্থীদের জন্য সংস্কার করা হয়েছে। বিশুদ্ধ খাবারের জল সরবরাহের জন্য ১৬টি নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। বিপুলসংখ্যক কাপড় পরিবর্তন কক্ষ ও ১৫০টি অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করেছে জেলা প্রশাসন,এ ছাড়া নদের কচুরিপানা অপসারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন বলেন, এবার স্নানোৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এম.এ মুহাইমিন আল জিহান জাগো সোনারগাঁও ২৪,কমকে জানান, স্নান উৎসব সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা তৎপর রয়েছে। কন্ট্রেল রুম থেকে সকল কিছু মনিটরিং করা হবে। আমরা আশা করি খুব শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবটি সম্পন্ন করতে পারবো।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন গনমাধ্যমকে বলেন, হিন্দু ধর্মালম্বীদের স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনী মিলিয়ে ১ হাজার ৫০০ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুরো এলাকাজুড়ে ১০০ এর অধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে মনিটরিং সেল বসানো হয়েছে। পুণ্যার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্নে করতে মহাসড়ক ও সড়কে অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব সময় তৎপর রয়েছে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩ নিউজ জাগো সোনারগাঁও ২৪
Leave a Reply